বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো ক্রিকেটারদের জন্য এবারের আসরই ছিল শেষ বিশ্বকাপ।
চলুন দেখে নেই কারা থাকছেন না পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে-
মাশরাফি বিন মুর্তজা (বাংলাদেশ)
১৬ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি দুইবার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেলেও এবারই প্রথম তিনি সফলভাবে দীর্ঘ সময়ে দলকে সামলেছেন। বলা যায়, এই মাশরাফি বিন মর্তুজার হাত ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বে বড় শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। বোলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও ব্যাটসম্যান মাশরাফিও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টেস্ট খেলছেন না অনেকদিন হলো।
৩৩ বছর বয়সী বাংলাদেশের ছোট ফরম্যাটের এই অধিনায়ক ক্রিকেটকে বিদায় না জানালেও এটাই যে তার শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এটা এক বাক্যে বলা যায়।
মহেন্দ্র সিং ধোনি (ভারত)
মহেন্দ্র সিং ধোনি, বাহারি লম্বা চুলে প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবার নজর কাড়েন। তবে, উইকেটের পেছনের পারফরম্যন্স, ব্যাট হাতে তাণ্ডব আর অধিনায়কত্ব দিয়ে তিনি নিয়ে যান অনন্য পর্যায়ে। তার অধীনেই ভারত প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায়। ওয়ানডে বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- সবই তার এর মধ্যে জেতা হয়ে গেছে।
৩৪ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক ও ব্যাটসম্যান ইতোমধ্যেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দিয়েছেন। ২০০৭ সালে ক্রিকেট শুরু করা এই অধিনায়ক, ওয়ানডে ক্রিকেটে থাকলেও টি-টোয়েন্টি তেমন দেখা যাবে না এই ‘ক্যাপ্টেন কুল’ নামে পরিচিত এই ক্রিকেটারকে।
শহিদ আফ্রিদি (পাকিস্তান)
শহিদ আফ্রিদি কতবার অবসরের ভাবনা জানিয়েও সেটা থেকে সরে এসেছেন সেই সংখ্যাটা তার নিজেরও জানা আছে কি না সন্দেহ। ২০১০ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে এবং গেল বছরের বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ‘বুম বুম’ আফ্রিদি।
৩৬ বছর বয়সী পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দলের এই অধিনায়কের ব্যাট গেল কয়েক বছর ধরেই রান খরায় ভুগছে। সম্প্রতি তার লেগস্পিন বোলিংও ব্যাটসম্যানদের তেমন সমস্যা ফেলতে পারছে না। তার ভয়াবহ অফফর্ম জানুয়ারি তে নিউজিল্যান্ড এবং নভেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তান দলের পারফর্ম্যান্সেও প্রভাব ফেলেছে অনেক। ১৯৯৬ সালে ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া এই ক্রিকেটারের ২০১৬ সালই হয়তো শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বছর হতে পারে।
লাসিথ মালিঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)
লাসিথ মালিঙ্গা ২০০৪ সালে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছিলেন। ইয়র্কার ডেলিভারির সহজাত দক্ষতা তাকে শ্রীলঙ্কান পেস ডিপার্টমেন্টে অপরিহার্য্য করে তোলে। তবে ইনজুরির কারণে ক্যারিয়ারটা খুব বড় করার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি।
২০১১ সালে অনেক অল্প বয়সেই মালিঙ্গা টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান। তার তিন বছর পর তিনি গোড়ালীর অস্ত্রোপাঁচার করান এবং হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েন। এশিয়া কাপের এবারের আসরের আগে তার ইনজুরি এতই বেড়ে যায় যে, ৩২ বছর বয়সী এই বোলার অবসর নেয়ারই চিন্তা করে ফেলেন। এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না খেলায় তার অবসরের সিদ্ধান্তকে আরো শক্ত করেছে।
তিলকারত্নে দিলশান (শ্রীলঙ্কা)
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওপেনিং পজিশনে তার মত ‘বিশেষজ্ঞ’ ব্যাটসম্যান খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তার আবিষ্কৃত ‘দিলস্কুপ’ শটের জন্য ক্রিকেট বিশ্বের পক্ষ থেকে তিনি ধন্যবাদ পেতেই পারেন। কিন্তু ৩৯ বছর বয়সে এসে শ্রীলঙ্কার এই সাবেক অধিনায়ক নিজের অবসরকে আর খুব বেশি দূরে ঠেলতে চাচ্ছেন না। ১৯৯৯ সালে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে ক্রিকেটাঙ্গনে আসলেও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সব ফরম্যাটেই দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার পথটা অনেক লম্বা ছিল তার জন্য। টেস্ট ছেড়েছেন আগেই। আর এখন বয়সের যা অবস্থা তাতে, চার বছর পরের বিশ্বকাপে তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
শেন ওয়াটসন (অস্ট্রেলিয়া)
নিজের সময়ে তাকে বিশ্বের সেরা পেস বোলিং অল রাউন্ডার বললেও ভুল বলা হবে না। বার বার ইনজুরি শেন ওয়াটসনের ক্যারিয়ারে স্থায়িত্ব কমালেও তাতে মরচে ধরাতে পেরেছে খুব সামান্যই।
তবে ৩৪ বছর বয়সে এসে আর ক্যারিয়ার লম্বা করার ইচ্ছা নেই তার। গেল বছর অ্যাশেজ সিরিজ হারের ফলে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন তিনি। ওয়াটসন ওয়ানডে স্কোয়াড থেকেও বাদ পরেন। তবে আবারো নিজের পুরনো রূপ প্রমাণ করে ফিরে আসাটা অনেকটাই বিস্ময়কর ছিল।
Post a Comment
0 comments
Dear readers, after reading the Content please ask for advice and to provide constructive feedback Please Write Relevant Comment with Polite Language.Your comments inspired me to continue blogging. Your opinion much more valuable to me. Thank you.
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.